গত ক'দিনের তীব্র দাবদহে বিপর্যস্ত ডুয়ার্সের জনজীবন। রাতের বেলা কোথাও কোথাও বৃষ্টি হলেও, দিনে সূর্যের প্রখর তাপে যেন পুড়ে যাচ্ছে সব কিছু। রাস্তাঘাট প্রায় লোক শূন্য। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউই চাইছেন না বাড়ি থেকে বের হতে। স্কুলে পডুয়াদের উপস্থিতিও কম। অবিভাবকেরা চাইছেন না এই গরমে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে।
সাপ্তাহিক হাটেও দেখা মিলছে না ক্রেতাদের। সারাদিন রোদে পুড়ে বসে থেকেও বিক্রি না হওয়ায় মাল আবার ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে বাড়িতে। ফলে হাটে আসা ব্যবসায়ীদের মন খারাপ। বিশেষ করে অল্প পুঁজির খুচরো সব্জী বিক্রেতাদের পড়তে হচ্ছে সমস্যায়। হাসপাতালে বেড়েই চলছে রুগীর সংখ্যা। সরকারি হাসপাতাল গুলির বেডের সংখ্যার চাইতেও রুগীর ভর্তির সংখ্যা হয়ে পরছে বেশি। ডাক্তারদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বিশাল সংখ্যক রুগীদের নিয়ে। তবে এদের বেশির ভাগ রুগীই ভুগছে জ্বর ও পেট খারাপ নিয়ে। বিশেষ করে দুপুর বেলার গরম হয়ে উঠছে আরও ভয়ংকর। বাইরে বের হলে যেনো পুড়ে যাচ্ছে শরীর। তাই অন্তত এই সময়টা অনেকেই চাইছেন বাড়িতেই থাকতে। তার ওপর লেগেই রয়েছে লোড শেডিং। ঘরের পাখা বন্ধ হওয়ায় পরিস্থিতি হয়ে উঠছে আরও অসহ্যকর। ঘামে ভিজে স্নান করতে হচ্ছে বারবার। তবে সেক্ষেত্রেও সমস্যা! ছাদে থাকা ট্যাংকের জল রোদের তাপে হয়ে উঠছে প্রচন্ড গরম। আবার গ্রামীন এলাকায় নদী ও পুকুরে ঝাপাচ্ছে ছেলে ছোকরার দল।
তবে এই গরমে অনেকটাই খুশি এসি ও ফ্যান বিক্রেতারা। প্রচন্ড গরম সহ্য করতে না পেরে যাদের সামর্থ্য আছে কিনছেন এসি, ঘরে ঘরে লাগাচ্ছেন ডাবল ফ্যান।
অন্যদিকে গরম সহ্য করতে না পেরে গর্ত থেকে বেরিয়ে আসছে সাপ ও জংগলের বন্য প্রাণীরা। ফলে লেগেই রয়েছে মানুষ বন্যপ্রাণী সংঘাত। পিচ ঢালা রাস্তায় উঠে গাড়ির চাকার নিচে পরে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে সাপ। এছাড়া পাড়ায় ঘোরা নেড়ি কুকুরদের পরিস্থিতিও গরমে কাহিল, একটু ছায়া খুজে সটাং হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে তাদের। এই পরিস্থিতিতে পশু প্রেমী সংগঠন ডুয়ার্স স্ট্রীট ডগ অ্যাসোসিয়েশনের অনুরোধ করেছেন, সম্ভব হলে প্রত্যেকের বাড়ির ছাদে ও বাইরে ছোট পাত্রে জল রাখতে। যাতে প্রয়োজনে নিরীহ পশুপাখিরা এই গরমে একটু জল পেতে পারে।
গরমে সেদ্ধ হয়ে প্রত্যেককেই তাকিয়ে আকাশের দিকে কখন হবে বৃষ্টি স্বস্তি মিলবে এই অসহ্য কর গরম থেকে।
আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
|
সবার আগে খবর পেতে , পেইজে লাইক দিন
|